স্পন্সরড এলার্ম



আমাদের এই প্রিয় পৃথিবীতে কত কিছুই না আশ্চর্যজনক। কত বৈচিত্র্যতা রয়েছে এখানে, তা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। বিচিত্র এই পৃথিবীর জলে-স্থলে যেমন রয়েছে অবাক করা বিষয়, ঠিক তেমনি ভূগর্ভেও ছড়িয়ে রয়েছে অনেক অবাক করা বিষয়। আসুন আজ পরিচিত হই ভূগর্ভস্থ এমনই আশ্চর্যকর ১০টি স্থানের সাথে।
পুয়ের্তো প্রিন্সেসা ভূগর্ভস্থ নদী:
প্রচ্ছদের ছবিটি পুয়ের্তো প্রিন্সেসা নদীর। অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় যেকোনো নৌকাভ্রমণকারীর কাছে ফিলিপাইনের পুয়ের্তো প্রিন্সেসা ভূগর্ভস্থ নদী অত্যন্ত পরিচিত এক নাম। নদীটি পাঁচ মাইল লম্বা। অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থান, নীরব, এবং শীতল এই স্থান যেকারোর গা ছমছম করতে বাধ্য। ইউনেস্কো এই স্থানকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি পালাওয়া দ্বীপে কার্স্ট চুনাপাথর পাহাড়ের নিচে অবস্থিত। নদীটি কাবায়ুগান নদীর সাথে দক্ষিণ চীন সাগরের সংযোগ ঘটিয়েছে। নদীটির তীর জুড়ে আটটি বন এবং প্রায় ৮শ’ প্রজাতির গাছ রয়েছে। সুড়ঙ্গটি বেশ কিছু ছোট-বড় সুড়ঙ্গ নিয়ে গঠিত। এর মাঝে এমন কিছু সুড়ঙ্গ আছে যেগুলো ৩৯০ ফুট চওড়া এবং ২০০ ফুট উঁচু।

রোমানিয়ার টুরডা লবণ খনি:
খনিটি ১৩ শতক পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়। সম্পূর্ণ হাতে চালিত এ খনিটি খনন করা হয় আনুমানিক ১০৭৫ সালে। ট্রানসালভানিয়ার এই খনিটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেই সাথে এখানে এখন যেকোনো দর্শনার্থী গেলে দেখতে পাবেন বাস্কেটবল খেলার স্থান, ছোট গলফ কোর্স, এমনকি এখানে আছে ছোট একটি লেক, যেখানে নৌকা চালানো যায়। খনির মুখ থেকে তলদেশ প্রায় ভূমি থেকে ৩৬৮ ফুট নিচে।

থ্রিহনুকাগিগুর আগ্নেয়গিরি:
আইসল্যান্ডের এই ভূগর্ভস্থ আগ্নেয়গিরি প্রায় ৪ হাজার বছরের পুরনো। এর ভেতর উত্তপ্ত লাভা আশ্চর্য কোনো এক কারণে ভূমির ৩৯০ ফুট নিচ দিয়ে নদীর মত প্রবাহিত। মানুষের পক্ষে এখানে খুব বেশি গভীরে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে পর্যটকদের সুবিধার্থে একটি ক্যাবল কারের ব্যবস্থা রয়েছে।

মেক্সিকোর ক্রিস্টাল গুহা:
মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়ায় ২০০০ সালের পর নাইকা খনিতে পানি পাম্প করে গর্ত করার সময় ৯০ ফুট নিচে আবিষ্কৃত হয় ক্রিস্টাল গুহা ‘লা কুয়েভা ডি ক্রিস্টালেস’। পৃথিবীর উপরিভাগে বা ভেতরে এর মতো আর কোনোকিছুই নেই। এখানের জিপসামের কলামগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক ক্রিস্টাল। এখানে মানুষের প্রবেশ প্রায় অসম্ভব। শতভাগ আর্র্ডতা এবং ১৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা এখানে মানুষের প্রবেশ প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।

ওয়াইটোমো জোনাক গুহা:
নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত এই গুহার ভেতর আলোর এমন খেলা বিদ্যমান, দেখলে মনে হবে অনেকগুলো জোনাকি পোকা সেখানে আটকে পড়েছে। অকল্যান্ড থেকে দুই ঘণ্টা দক্ষিণে গেলে রোটারুয়ার পশ্চিমে ওয়াইটোমো পাহাড় পড়ে। এই পাহাড়ের নিচেই সন্ধান মিলবে জোনাকি পোকায় ভর্তি গুহার।

পোকো এনকানটাডো:
ব্রাজিলের পূর্ববর্তী সীমান্তে জঙ্গলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এটি একটি লেক। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে, সূর্য যখন আকাশের ডান পাশে থাকে, তখন এখানে এক অদ্ভুত নীল আভার সৃষ্টি হয়। এখানের পানি এতো পরিষ্কার যে, যে কেউ পানির ২শ’ ফুট পর্যন্ত নিচ পর্যন্ত দেখতে পারবেন।

গ্রিনব্রিয়ার, সাদা সালফারের বসন্ত:
ফুটবল খেলার দুটো মাঠের সমান বড় এই এলাকা মূলত একটি নিরাপত্তা ঘর হিসেবে তৈরি করা হয়। ১৯৫৬ সালে স্নায়ুযুদ্ধের সময় ১ হাজার ১শ’ মানুষ থাকার মতো এবং বিস্ফোরণ ঠেকাতে ২৫ টন ওজনের দরজা দিয়ে এই ঘর গড়ে তোলা হয়। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধ এখন ইতিহাস। পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় এলেয়নি পর্বতের গ্রিনব্রিয়ার এলাকায় এটি অবস্থিত।

সান্টা মারিয়া ডেলা কনসেজিওনে দে কাপুচিনি:
রোমে ধর্মান্ধতার যুগে এটি গড়ে তোলা হয়। সূর্য দেবতা মিথ্রাসের উপসনার জন্য এই গীর্জা গড়ে তোলা হয়। এখানে সমাধিগৃগ সাজাতে ৪ হাজার সন্নাসীর হাড় ব্যবহার করা হয়েছে।

ভূগর্ভস্থ বাগান:
ক্যালিফোর্নিয়ায় এটি অবস্থিত। ১৯০৬ সাল থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত সিসিলিয়ান বালদাসারে এই বাগান গড়ে তোলেন। সাধারণ খননের যন্ত্র দিয়েই তিনি প্রায় ১০ হাজার বর্গফুট এলাকা খনন করেন, এমনকি এখানে একটি পুকুরও খনন করেন।

কেবিনেট ওয়ার রুম:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আটলান্টিকের পাড়ে ব্রিটিশ প্রাণকেন্দ্রে আরেকটি গোপন বাঙ্কারের সন্ধান পাওয়া গেছে। চার্চিলের যুদ্ধ পরিকল্পনার গোপন এই আস্তানা এখন একটি জাদুঘর। এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে সে সময় ব্যবহৃত অনেকগুলো উড়োজাহাজ, যুদ্ধে ব্যবহৃত মানচিত্রসহ আরো অনেক কিছু।
সূত্রঃ প্রিয় ডট কম
(2926)