স্পন্সরড এলার্ম


প্রায় দুইশ বছর আগে মেরি শেলি লিখেছিলেন ‘ফ্রাংকেনস্টাইন’ বইটি। এই বইয়ে তার তৈরি দানব চরিত্র ‘ফ্রাংকেনস্টাইন’ জীবন লাভ করেছিল বজ্রবিদ্যুৎ থেকে। বিজ্ঞানীরা অবশ্য বজ্রবিদ্যুৎ ব্যবহার করে খুব বেশি কাজ করতে পারেননি। তবে ‘ফ্রাংকেনস্টাইনে’র মতো করেই মোবাইল ফোনকে চার্জ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করতে যাচ্ছেন বজ্রবিদ্যুৎ।
বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোনের ব্যবহার যখন সর্বত্র, তখন বজ্রের ব্যবহারে মোবাইল ফোনের চার্জ করার কৌশল হতে পারে সকলের জন্য বড় ধরনের একটি সমাধান। মোবাইল জায়ান্ট নকিয়ার সাথে সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করেছে। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এই প্রযুক্তির প্রাথমিক পরীক্ষাও চালানো হয়েছে। তবে আপাতত বাড়িতে বসে এই ধরনের প্রচেষ্টাতে বারণ করেছে তারা। এদিকে বিশ্বব্যাপী যখন শক্তির সংকট চলছে, তখন এই ধরনের প্রাকৃতিক উত্স থেকে বিদ্যুতের ব্যবহারকে ইতিবাচক হিসেবেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বজ্র থেকে বিদ্যুৎ আহরণের পরীক্ষায় নকিয়া-সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের গবেষণাগারে ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করে তৈরি করেছে কৃত্রিম বজ্র। মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার স্থানে তারা এর মাধ্যমে ২ লক্ষ ভোল্টের বজ্র তৈরি করেন। এরপর নকিয়ার তৈরি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে একে কাজে লাগানো হয়েছে ব্যটারি চার্জ করতে।
সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই-ভোল্টেজ ল্যাবরেটরির গবেষক নেইল পামার জানিয়েছেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করেছি, নকিয়ার উদ্ভাবিত যন্ত্রপাতিগুলো এই বিপুল পরিমাণ শক্তিকে ব্যবহার করেও টিকে থেকেছে এবং ব্যাটারি চার্জ করতে পেরেছে। এই অভাবিত ঘটনা প্রকৃতির শক্তিকে ব্যবহারের পথ অনেকটাই সুগম করে দিয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে নকিয়ার সেলস বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস ওয়েবার বলেন,’আমরা সবসময়ই চেষ্টা করে এসেছি প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতাকে কী করে অতিক্রম করা যায়, তা নিয়ে। এটি তারই একটি ধারাবাহিকতা।’ বজ্রের এই শক্তি ব্যবহার বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উত্পাদনে নতুন এক ধারার সূচনা করতে সক্ষম হবে বলেই ধারণা করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যেসব এলাকায় বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য উত্স নেই, সেখানে এই প্রযুক্তি আশীর্বাদ হয়েই আসবে। তবে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসবে কি না কিংবা কবে নাগাদ আসবে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানায়নি নকিয়া কিংবা সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়।
(1478)