স্পন্সরড এলার্ম



আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় ফ্রিজ শুধু খাবার সংরক্ষণের জন্যই নয়, বরং এর আছে টুকিটাকি আরও কিছু উপকারিতা। এমনই একটা উপকারিতা হলো, মোমবাতিকে ভালোভাবে জ্বলতে সাহায্য করা। একটা মোমবাতিকে ফ্রিজে একদিন রেখে তারপর জ্বালিয়ে দেখুন তো, আগের চাইতে বেশ কিছুটা সময় বেশী জ্বলবে। কিন্তু কেন?

এই ব্যাপারে জানতে হলে আগে জেনে নিতে হবে মোমবাতির আদ্যোপান্ত। মোমবাতির অংশ হলো মোম আর মাঝখানে একটা সলতে। এই সলতে থাকে মোমে ভেজানো। যেসব মোমবাতি আমরা কিনি তার সিংহভাগই প্যারাফিন নামের একটি জ্বালানী। বিভিন্ন রকম তেলের সাথে এর গঠনের মিল আছে। কিন্তু তেল যেভাবে পুড়ে যায়, মোমবাতির মোম সেভাবে পোড়ে না, বরং গলে যায়। এর কারণ হলো, এই প্যারাফিন মোম গলাতে বেশ উঁচু তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। আর সেই তাপমাত্রা থাকে শুধুমাত্র মোমবাতির সলতের যে অংশটি পুড়ছে, সেখানে। সলতের সাথে লেগে থাকা মোম পুড়ে যায় আর আলো দেয়। এর আশেপাশের মোমে একটু কম তাপ লাগে, তাই সে গলে পড়ে।
মোমবাতি ফ্রিজে রাখলে কি হয়? অবশ্যই ঠাণ্ডা হয়ে যায় এই মোমবাতিটি। একদিনের মত এই মোমবাতি ফ্রিজে রেখে দিলে এর পুরো অংশটাই মোটামুটি সমানভাবে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। এমনকি এর সলতের সাথে লেগে থাকা মোমের কণাগুলোও ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। এরপর যখন ফ্রিজ থেকে বের করে একে জ্বালানো হবে, তখন পরিবেশের তাপমাত্রার চাইতে এই মোমবাতির তাপমাত্রা কম হবার কারণে এটি গলতে বেশী সময় নেবে। সলতে এবং এর আশেপাশের মোম ঠাণ্ডা থাকবার কারণে একে গলিয়ে ফেলতে বেশী তাপের প্রয়োজন হবে ফলে সময়টাও বেশী লাগবে।
মোমবাতির উপাদান প্যরাফিন যেহেতু একটি অধাতু, সুতরাং এর মধ্য দিয়ে তাপ পরিবাহিত হয় ধীর গতিতে। ফলে এর উপরের অংশে সলতে জ্বলতে থাকলেও নিচের অংশে সেই তাপ পৌঁছাতে বেশ দেরি হবে। ফলে পুরোটাই একটু একটু করে গলতে বেশী সময় নেবে। তুলনা করে দেখবার জন্য ফ্রিজে রাখা মোমবাতি আর ঘরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা একটি মোমবাতি পাশাপাশি জ্বালিয়ে দেখতে পারেন। ফ্রিজে রাখা মোমবাতি অবশ্যই বেশী সময় ধরে জ্বলবে। আর শীতকালের চাইতে গরমকালে এই প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করা যাবে আরও ভালোভাবে কারণ তখন ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা এবং বাইরের তাপমাত্রার পার্থক্য বেশী থাকে।

তবে ফ্রিজে এভাবে মোমবাতি রাখার ব্যাপারে একটা সমস্যাও হতে পারে। সাধারণ রেফ্রিজারেটরে না রেখে ফ্রিজারে রেখে একেবারে জমিয়ে ফেলবেন না যেন মোমবাতিটিকে। তাহলে মোমবাতির প্যারাফিন জমে ফেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে। মোমবাতি ব্যবহারের পর মোমদানী থেকে গলা মোম ওঠানোর জন্যেও ফ্রিজ কাজে আসতে পারে। এই মোমদানীকে ফ্রিজে রেখে দিন। গলা মোম আর মোমদানীর উপাদান পদার্থ (কাঁচ বা ধাতু) ফ্রিজে ঠাণ্ডার প্রভাবে সংকুচিত হবে। কিন্তু ধাতু বা কাঁচ যে পরিমাণ সংকুচিত হবে, মোম সে পরিমাণে সংকুচিত হবে না। এই পার্থক্যের জন্য কয়েক ঘণ্টা পরে এই মোমদানী বের করে নিলে তার ওপর থেকে সহজেই উঠে আসবে গলা মোমের টুকরো।
সূত্রঃ প্রিয় ডট কম
(1842)