স্পন্সরড এলার্ম



আমাদের এই যে পৃথিবীতে আমরা বেঁচে আছি, তারও যে একটা জীবনের রয়েছে এটা আমাদের মাঝে মাঝে মনেই থাকে না। আমরা মনে করি একেবারে কোনো রকমের যত্ন ছাড়াই পৃথিবী অপরিবর্তিত থাকবে, আমাদের চাহিদা মিটিয়ে যাবে দিনের পর দিন। কিন্তু আসলে কি তাই? মোটেই না। আমাদের স্বার্থপরতার কারণে পৃথিবী অনেক দিন ধরেই হারাচ্ছে তার সজীবতা। পৃথিবীর জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি রক্ষাবুহ্য হলো বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর। এই ওজন স্তর ক্ষয় করে চলেছে, এমন নতুন আরও চারটি পদার্থের কথা জানা গেছে। আশংকার ব্যাপার হলো, এর সবগুলোই মানুষের তৈরি রাসায়নিক।

মানুষ যে প্রকৃতি ও পরিবেশের উপকারে কিছু করছে না তা কিন্তু নয়। ওজোন স্তরে ছিদ্র দেখা দেবার পরে মন্ট্রিল প্রোটোকল নামের এক আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে থেকে ওজোন স্তর ক্ষয়কারী পদার্থের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১৯৮৯ সাল থেকেই। ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) নামের এই সব পদার্থ সাধারণত আগে রেফ্রিজারেটর/এসি দিয়ে ঠাণ্ডা রাখতে, অ্যারোসল তৈরিতে ব্যবহার করা হতো , এখন আর এদের চল নেই। ওই আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে এসবের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে ওজোন স্তরকে সেরে ওঠার সুযোগ দেওয়া হয়। ধারণা করা হয়েছিলো ২০৫০ সালের মাঝে ওজোন স্তর আবার আগের মতো নিশ্ছিদ্র হয়ে উঠবে।
২০১০ সালের মাঝে সব ধরণের CFC ব্যবহার মোটামুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু মন্ট্রিল প্রটোকলের কিছু ফাঁকফোকর ছিলো। একেবারে ক্ষুদ্র পরিমাণে CFC এখনো ব্যবহার করার সুযোগ রয়ে গেছে। এসব ফাঁকফোকরের কল্যাণে মোটামুটি ৮২ হাজার টনের মতো পদার্থ বায়ুমণ্ডলে চলে এসেছে, যেসব পদার্থ ওজোন স্তরের ক্ষতি করছে।

এদের মাঝে তিনটি হলো CFC, যাদের ব্যাপারে আগে আমরা জানতাম না, আর চতুর্থ আরেকটি পদার্থ যাকে বলা হয় HCFC। এটা ওজোন স্তরের ক্ষয়ের পরিমাণ তেমন বাড়াবে না, কিন্তু ওজোন স্তর সেরে ওঠার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারে। এসব পদার্থের উৎপাদনে যদি এখনই রাশ টানা না হয়, তবে বায়ুমণ্ডলে এক সময়ে এদের পরিমাণ বেড়ে ওজোন স্তরের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে।
এসব পদার্থ যে মানুষের তৈরি তা কি করে জানা গেলো? গ্রিনল্যান্ডের বরফে আটকা পড়ে থাকা প্রায় এক শতাব্দী পুরনো বাতাসের সাথে তুলনা করে দেখা গেছে, তখন বাতাসে এসব পদার্থ ছিলো না, তাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে বলা যায় এসব পদার্থ মানুষের সৃষ্টি। এসব পদার্থ মূলত উত্তর গোলার্ধ থেকে তৈরি হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শীঘ্রই এদের উৎপাদন বন্ধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছেন গবেষকেরা।
সূত্রঃ প্রিয় ডট কম
(1366)