স্পন্সরড এলার্ম


গল্প বলার আগে একটা কথা বলি- আবাসিক হোটেলে থেকে একটি প্রতিষ্ঠানে আমি পড়ালেখা করি। সেখান থেকে কমপক্ষে একমাস পর পর বাসায় আসি। এবার বাসায় ফিরে ইন্টারনেট খুলে দেখি এবারের বিষয় ‘ক্ষোভ’। চট জলদি চলে গেলাম মায়ের কাছে ছোটবেলার কোন রাগের গল্প শোনার জন্য । কিন্তু আম্মু বললেন- তোদের সবার ভিতরে ছোটকাল থেকেই রাগ কম। আমি নিরাশ হলাম। হঠাৎ মনে পড়ল বহু আগের কারো থেকে শোনা একটা ঘটনা। ঘটনাটি রাগ সম্পর্কিত এবং শিক্ষনীয়। তাই আমার নির্বাচনে এই গল্পটিই জয়ী হলো।
বহু যুগ আগের কথা। এক দেশে ছিলো এক প্রভাবশালী মূর্খ বাদশাহ। মূর্খদের অভ্যাস-
প্রশংসায় খোশ বদনামে নাখোশ,
আর পুরো রাজ্যে সম্বন্ধে একেবারে বেহুশ।
তাই প্রশংসা পাবার সকল উপকরণ সর্বদা রাজমহলে বিদ্যমান থাকত। এই কবি এসে বাদশাহের প্রশংসার কবিতা আবৃতি করলো ওই নর্তক-নর্তকী এসে নাচ-গান পরিবেশন করলো। কখনো সামান্য প্রশংসা শুনে বা নাচ-গান দেখে বাদশাহ তাদের উপর টাকার বস্তা ঢালছেন কখনো নিজের সামান্য বদনাম শুনে ক্রোধে বদনামকারীর গর্দান নামিয়ে দিচ্ছেন। এভাবেই চলছিল তার রাজমহলের দৈনিক কর্মকাণ্ড। আর প্রজাগনও কেমন যেন বাদশাহকে সন্তুষ্ট করতেই উঠে পড়ে লেগেছেন। এক দিনের ঘটনা-
ওই বাদশাহ্ কোন এক কবির উপর খুব রাগ করলেন। হয়ত তার কবিতায় শাহী বদনাম প্রকাশ পেয়েছে। তো নিয়মানুযায়ী জল্লাদকে হুকুম করলেন-
আমার সামনেই তার গর্দান উড়িয়ে দাও। জল্লাদ তাকে টেনে হেচড়ে ‘মাক্বতালে’ (যে জায়গায় দাড়া করিয়ে হত্যা করা হয় সে জায়গার নাম) নিয়ে গেল। কবি সেখানে দাড়িয়ে মৃত্যুরভয়ে প্রচণ্ডভাবে কাঁপতে শুরু করলো।
বাদশাহের দরবারে সর্বদাই দোস্ত-আহবাবের (সহচর-সহযোগীর) সমাগম থাকে। তাদের একজন কবির এ’অবস্থা দেখে সামনের দিকে এগিয়ে গেল এবং কবিকে লক্ষ্য করে বললোঃ-
‘ওহে কবি মশাই! এ তো দিখছি বহুত কাপুরুষতা ও হীনমন্যতার পরিচয়। জীবনে কোন পুরুষ মানুষকে মৃত্যুর আগে এভাবে কাঁপতে দেখি নাই। আপনি জ্ঞানী মানুষ; আপনার সাহস তো আরো বেশি থাকার কথা ছিলো’
আসলে কবি আটঁছিলো বাঁচার ফন্দি। অনেকদিন ধরেই সে এখানে আছে। বাদশাহের আচার-আচারণ সম্বন্ধে সে অনেক কিছুই জানে। অনেককেই দেখেছে বাদশাহের সামনে হত্যা হতে। লোকটির এমন কথায় সে সুযোগ পেয়ে গেল। (1912)