স্পন্সরড এলার্ম



একটি প্রাচীন ও বিশাল আকৃতির ভাইরাস প্রায় ত্রিশ হাজার বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এটা সাইবেরিয়ার ভূ-গর্ভস্থ বরফের নিচে বহু বছর চাপা ছিল। কিন্তু যখনই বরফ গলে যেতে শুরু করলো, ভাইরাসটি হয়ে উঠলো সংক্রমণক্ষম। যদিও ফরাসি গবেষকরা বলছেন, এ ভাইরাসটি মানুষকে সংক্রমিত করতে সক্ষম নয়। তবে মাটির নিচে থাকা এ ভাইরাস অন্য ভাইরাসকে সংক্রমিত করার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা আছে। এ সংক্রান্ত গবেষণা Proceedings of the National Academy of Sciences (PNAS).এ প্রকাশিত হয়েছে। এতো দীর্ঘ সময় পর কোনো ভাইরাসের মাঝে সংক্রমণ ক্ষমতা সৃষ্টির ঘটনা এটাই প্রথম।
আজ থেকে ১০ বছর আগে এ প্রাচীন ভাইরাসটিকে বরফে জমে যাওয়া মাটির ৩০ মিটার নিচে খুঁজে পাওয়া যায়। Pithovirus sibericumনামের এ ভাইরাসটি বিশাল আকৃতির ভাইরাস শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত। অন্য ভাইরাস অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে দেখা যায় না। কিন্তু এ ভাইরাসের ঘটনা ভিন্ন। এটা দৈর্ঘ্যে ১.৫ মাইক্রোমিটার। এখন পর্যন্ত এটাই জানা তথ্যমতে সবচেয়ে বড় ভাইরাস।

ত্রিশ বছর আগে এটা সর্বশেষ সংক্রমণ ঘটিয়েছিল। এরপর বিজ্ঞানীরা আবার এটাকে গবেষণাগারে সক্রিয় করে তুলেছেন। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এ ভাইরাস এক কোষী এমিবাকে আক্রমণ করে, কিন্তু বহুকোষী মানুষ বা অন্য প্রাণীকে সংক্রমিত করতে পারে না। গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, সাইবেরিয়ার এ অঞ্চলের নিচে আরো অনেক ভয়াবহ জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে।
গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, সাইবেরিয়ার এ অঞ্চলটি এখন বেশ ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ ১৯৭০ সালের পর থেকে এ অঞ্চলের বরফের পুরত্ব খুবই হ্রাস পেয়েছে। আর জলবায়ুর ক্রম পরিবর্তনের ফলে এটা আরো হ্রাস পাবে। এর ফলে মাটির নিচে কোনো ভাইরাস আটকা পড়ে থাকলে সেটার বাতাসে মুক্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আশঙ্কার কথা হচ্ছে, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের জন্য এ অঞ্চলে মানুষের চলাচল দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এর ফলে মানুষের মাঝে কোনো না কোনোভাবে নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। গবেষকরা এখনো নিশ্চিত নন যে, সব ভাইরাসেরই হাজার হাজার বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার পর সক্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে কিনা। বিবিসি’র দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গুটি বসন্তের জন্য দায়ী একটি প্রাচীন ভাইরাসকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলেও বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটা এখনো মানুষের জন্য বিশাল এক হুমকি।
(1112)