স্পন্সরড এলার্ম


আসসালামু আলাইকুম,
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) যে, পবিত্র নূর মুবারক এর সৃষ্টি এতে কোন ধরনের সন্দেহ নেই। কিন্ত গুটি কয়েক আলেম যারা আমাদের প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মাটির তৈরী বলেন।(নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। তাদের কাছে কোন ধরনের দলীল নাই। তারা তাদের মনগড়া লেখক এর বই পড়ে এসব ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণ করে। আমি এখন থেকে রাসূলে করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র নূ মুবারক নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করব।আর তার আগে ওই সকলা ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণ কারীদের কে বলবো, যদি আপনারা আপনাদের পক্ষে কোন প্রমান দেখাতে পারেন তাহল আমি আপনাদের কে ৫লক্ষ টাকা পুরস্কার দিব। আর যদি না পারেন তাহলে আমাকে আপনাদের দিতে হবে।
যাই হোক এখন আমি আমার আলোচনা শুরু করি।
>> নূরে মুহাম্মাদী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টি রহস্য ও প্রকৃতি।ইতিহাস। পর্ব-১
আমি প্রথমেই পবিত্র সূরা মায়েদার একটি আয়াত বলতে চাই
“ক্বদ জা-আকুম মিনাল্লাহি নূরুউওয়া কিতাবুম মুবিন”
অর্থঃ- আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের নিকট আগমন করেছে নূর এবং সু-স্পষ্ট কিতাব।
**এই নূরে ব্যাখ্যায় তাফসীরে জালালাইন ও তাফসীরে রুহুল বয়ানে বলা হয়েছে, নূর দ্বারা রাসূল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও কিতাব দ্বারা পবিত্র আল-কুরআন কে বুঝানো হয়েছে।
অনাদি অনন্ত স্বত্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যখন িএকা ও অপ্রকাশিতছিলেন তখন তার অত্ন প্রকাশেন সাধ ও ইচ্ছা জাগরিত হলো। তখন তিনি একক হিসেবে নবী কনিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র নূর মুবারক সৃষ্টি করলেন এবং নাস রাখলেন মুহাম্মাদ ।
{কানজুদ্দাকায়েক-ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)}
সেই নূরে মুহাম্মাদীর সৃষ্টি রহস্য ও প্রকৃতি সম্পর্কে স্বয়ং নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারফু মুত্তাসিল হাদীসের মাধ্যমে পরিস্কার ব্যাখ্যা করে গেছেন। উক্ত হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে জাবের ইনে আবদুল্লাহ (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) কতৃক। উক্ত হাদীসটি প্রথম সংকলিত হয়েছে “মোসন্নেফ আব্দুর রাজ্জাক” নামক হাদীস গ্রন্থে। মুহাদ্দিস আবদুর রাজ্জাক ছিলেন হযরত ইমাম বুখারী (রহঃ) এর দাদা ওস্তাদ এব ইমাম মালেক (রহঃ) এর শাগরিদ। পরবর্তীতে উক্ত গ্রন্থ হতে অনেক হাদীস বিশারদগণ নিজ নিজ গ্রন্থে হাদীসখানা সংকলিত করেছেন। যেমন- ইমাম কাসতুলানী (রহঃ) তার রচিত নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবনি গ্রন্থ “মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়্যায়” উক্ত হাদীসখঅনা সংকলন করেছেন। মিশরের আল্লামা ইউসুফ নাবহানী াতর রচিত আনওয়ারে মুহাম্মাদীয়া নামক আরবী গ্রন্থেও উক্ত হাদীসখানা উল্লেখ করেন। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সৃষ্টি সম্পর্কে এই হাদীসখানা স্বব্যাখ্যাত এবং বিস্তারিত। তাই বিজ্ঞ পাঠকের সামনে আমি উক্ত হাদীসখানা অনুবাদ সহকারে তুলে ধরছি।
অর্থঃ- ইমাম আবদুর রাজ্জাক মুয়াম্মার হতে, তিনি ইবনে মুনকাদার হতে, তিনি হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্ণনা করেছেনঃ হযরত জাবের (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমার উপর আমার পিতা মাতা উৎসর্গ হউক, আল্লাহ তায়ালা সর্ব প্রথম কোন বস্ত সৃষ্টি করেছেন? তদুত্তরে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন-”হে জাবের, আল্লাহ তায়ালা সর্ব প্রথম সমস্ত বস্তুর পূর্বে তার নিজ নূর হতে তোমার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন। তারপর আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছানুযায়ী ঐ নূর (লা-মাকানে) পরিভ্রমণ করতে থাকে। কেননা ঐ সময়ে না ছিল লাওহে মাহফুজ, না ছিল কলম,না ছিল বেহেস্ত, না ছিল দোযখ, না ছিল ফিরিস্তা, না ছিল আকাশ, না ছিল পৃথিবী, না ছিল সূর্য, না ছিল চন্দ্র, না ছিল জ্বীন জাতি, না ছিল মানবজাতি। অতঃপর যখন আল্লাহতায়ালা অন্যান্য বস্তু সৃষ্টি করার মনস্থ করলেন তখন আমার ঐ নূরকে চারভাগে বিভক্ত করে প্রথমভাগ দিয়ে কলম, দ্বিতীয়ভাগ দিয়ে লাওহে-মাহফুয এবং তৃতীয়ভাগ দিয়ে আরশ সৃষ্টি করলেন। অবশিষ্ট এক ভাগকে আবার জচার ভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগ দিয়ে আরশ বহনকারী ফিরিস্তা , দ্বিতীয় অংশ দিয়ে কুরসি এবং তৃতীং অংশ দিয়ে অন্যান্য ফিরিস্তা সৃষ্টি করলেন। দ্বিতীয় চার ভাগের এক ভাগকে আবার চার ভাগে বিভক্ত করে প্রথমভাগ দিয়ে আকাশ , দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে জমিন এবং তৃতীয় ভাগ দিয়ে বেহেস্ত ও দোযখ সৃষ্টি করলেন। তৃতীয়বার অবশিষ্ট এক ভাগকে পুনরায় চার ভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগ দিয়ে মুমিনের নয়নের নূর, দ্বিতীয়ভাগ দিয়ে মুমিনদের কলবের নূ- তথা আ্ল্লাহর মা’রেফাত এবং তৃতীয়ভাগ দিয়ে মুমিনের মহব্বতের নূর তথা তাওহীদি কালিমা “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” সৃষ্টি করলেন। (২৫৬ ভাগের এক ভাগ দিয়ে অন্যান্য সৃষ্টিজগত সৃষ্টি করলেন।
– মাওয়াহেবে লাদুনিয়্যাহ ও মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-(আল জুয্উল মাফকুদ অংশ)
ব্যাখ্যাঃ- উক্ত হাদীসে বর্ণিত “মিন-নূরিহী” বা তার “নিজ নূর” হতে শব্দটির ব্যাখ্যায় বিশ্ব বিখ্যাত আল্লামা হযরত মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) মিরকাত শরীফে লিখেছেন- “আয়-মিন লামআতে নূরিহী”- অর্থাৎ- আল্লাহ তায়ালা তার আপন যাতি নূরের জ্যোতি দিয়ে নবীজীর নূর সৃষ্টি করেছেন।
#মুজাদ্দেদে জামান আলফেসানী (রহঃ) মাকতুবাত শরীফের ৩য় খন্ড ১০০ নম্বরের মাকতুবে বলেছেন “আল্লাহ তায়ালা তাহাকে স্বীয় খাস নূর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন”।
#হযরত যারকানী (রহঃ) “মিন-নূরিহী” এর ব্যাখ্যায় বলেছেন – “মিন নূরিন হুয়া যাতুহু”
অর্থাৎ আল্লাহর যাত বা স্বত্বা হলো নূর-সেই যাতি নূরের জ্যোতি হতেই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নূরের সৃষ্টি” এবং হযরত আশরাফ আলী থানবীও একই ব্যাখ্যা দিয়েছেন তার “নশরুত ত্বীব” গ্রন্থের ৫ম পৃষ্ঠায়।
#অন্য এক হদীসে হযরত আলী ইবনে হোসাইন ইবনে আলী (রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) তার পিতা ও দাদার সূত্রে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন
অর্থঃ- আমি আদম সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বৎসর পূর্বে আমার প্রতিপালকের নিকট নূর হিসেবে বিদ্যমান ছিলাম।
(উল্লেখ্য যে ঐ জগতের একদিন পৃথিবীর এক হাজার বৎসরের সমান। অংকের হিসাবে ৫১১০০০০০০০ বৎসর হয়।
-বিদায়া ও নিহায়া এবং আনওয়ারে মুহাম্মাদীয়া গ্রন্থসূত্রে এই হাদীসখানা উদ্ধৃত করা হয়েছে।)
আজ এই পর্যন্ত। সকলেই কমেন্ট করবেন। দেখা হবে আগামী পর্বে। আসসালামু আলাইকুম। (271680)
এই এলার্মটিতে ১টি এলার্মেন্টস করা হয়েছে