স্পন্সরড এলার্ম


বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ই ভালো। আজ থেকে আমি “ফটোশপ ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল উপস্থাপন করতে যাচ্ছি যার মূল উদ্দেশ্য ফটোশপের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু নিয়ে আলোচনা করা। গ্রাফিক্স এবং ওয়েব ডিজাইনিং এর জগতে ফটোশপ একটি অতি পরিচিত নাম। এর প্রয়োজনীয়তাও অনেক। সার্বিক বিবেচনায় তাই আমি আপনাদের সাথে আমার এই টিউটোরিয়ালটি শেয়ার করতে যাচ্ছি। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
ফটোশপের পুরো নাম ADOBE PHOTOSHOP । এর এখন পর্যন্ত লেটেস্ট ভার্সন ADOBE PHOTOSHOP CS5। তবে আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে আমি ADOBE PHOTOSHOP CS এ কাজ করব। নিচে ফটোশপের মূল উইন্ডোটি দেখানো হল ( ADOBE PHOTOSHOP CS )
ফটোশপ ওপেন করলে উপরের উইন্ডোটি পাওয়া যাবে। উপরের চিত্রটিতে টুলবার , মেনুবার এবং টুলস অপশন বার দেখানো হল। এবার আসুন,টুলবারের বিভিন্ন টুলের সাথে পরিচিত হই।
১) মুভ টুলঃ এটি দিয়ে ফটোশপে যেকোনো অবজেক্টকে মুভ করা হয় অর্থাৎ নাড়ানো হয়।
২) মারকিউ টুলঃ এটা দিয়ে সিলেকশান তৈরি করা হয়। এই বাটনে ক্লিক করলে আরো চারটি টুল পাওয়া যায়
Rectangular Marquee Tool দিয়ে চতুর্ভুজাকৃতির সিলেকশান, Elliptical Marquee Tool দিয়ে বৃত্তাকার সিলেকশান এবং বাকি দুটি টুল দিয়ে যথাক্রমে row এবং column আকারের সিলেকশান তৈরি করা যায়।
৩) ম্যাজিক ওয়ান্ড টুলঃ এটা দিয়ে ইমেজের কোনো স্থানে ক্লিক করলে ঐ জায়গার রঙ বিশিষ্ট অন্যান্য অংশও সিলেক্ট হবে।
৪) লেসো টুলঃ এটা দিয়েও কোন অবজেক্ট সিলেক্ট করা যায়। এই বাটনেও ক্লিক করে তিনটি টুল পাওয়া যায়।
Lasso Tool এর সাহায্যে মাউস ক্লিক করে ধরে রেখে অবজেক্টের চারপাশে ড্র্যাগ করে ঐ অবজেক্টটি সিলেক্ট করা হয়।
Polygonal Lasso Tool দিয়ে মাউস বাটন ক্লিক করে করে অবজেক্টের চারপাশে সিলেকশান তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে Lasso Tool এর মত মাউস বাটন ধরে রাখা লাগেনা।
Magnetic Lasso Tool দিয়ে অবজেক্টের চারপাশে মাউস নিয়ে গেলেই রঙের উপর ভিত্তি করে সয়ংক্রিয় ভাবে সিলেকশান তৈরি হয়।
৫) স্লাইস টুলঃ ওয়েবসাইটে পোষ্ট করার জন্য কোনো ছবি সেভ করতে গেলে এই টুল দিয়ে ছবিটিকে স্লাইস বা টুকরা করতে হয় নিচের চিত্রের মত।
৬) ক্রপ টুলঃ এটা দিয়ে কোন ইমেজের নির্দিষ্ট অংশ রেখে বাকি অংশ ফেলে দেয়া যায়।
যেমন নিচে দেখুন,
ক্রপ করার পরে
Enter প্রেস করার পরে
৭) ব্রাশ টুলঃ এই বাটনে ক্লিক করলে দুটো টুল পাওয়া যায়।
ব্রাশ দিয়ে তুলির মত অঙ্কন করা যায়। পেন্সিল দিয়ে পেন্সিলের মত করে অঙ্কন করা যায়।
৮) প্যাচ টুলঃ এই বাটনে ক্লিক করে তিনটি টুল পাওয়া যায়। এই টুলগুলো দিয়ে এডিটিং এর কাজ করা হয়। (পরবর্তী পর্বে এ সম্পর্কে জানতে পারবেন। )
৯) হিস্টোরি ব্রাশ টুল ও আর্ট হিস্টোরি ব্রাশঃ এগুলোর ব্যবহারও পরবর্তী পর্বে প্রজেক্টের মাধ্যমে দেখানো হবে।
১০) ক্লোন স্ট্যাম্প টুলঃ এখানেও দুটি টুল আছে।
ক্লোন স্ট্যাম্প টুল দিয়ে ইমেজের মধ্যে কোনো অংশে ইমেজের অন্য অংশের কপি তৈরি করা হয়।
প্যাটার্ণ স্ট্যাম্প টুল দিয়ে ইমেজের কোনো অংশে প্যাটার্ণ কপি করা হয়।
১১) এতেও তিনটি টুল আছে।
ডজ টুল। এটা দিয়ে ইমেজের কন্ট্রাস্ট বৃদ্ধি করা হয়। যেমন উপরের ছবিটিকে ডজ টুল ব্যবহার করে নিচের মত করা হল।
বার্ন টুল। এটা দিয়ে ইমেজের কন্ট্রাস্ট কমানো হয়। যেমন, একই ছবিটি বার্ন টুল ব্যবহারে নিচের মত হয়।
স্পঞ্জ টুল।এটা দিয়ে ইমেজ সাদাকালো করা হয়।
১২) এতেও তিনটি টুল আছে।
ব্লার টুল দিয়ে ছবি ঘোলা করা হয়।
যেমন,এই ছবিটি
ব্লার টুল ব্যবহার করে নিচের মত করা যায়।
শার্পেন টুল দিয়ে ছবির শার্পনেস বাড়ানো হয়। যেমন, একই ছবিটি ব্লার টুল ব্যবহার না করে যদি শার্প টুল ব্যবহার করা হয় তবে নিচের মত হবে।
স্মাজ টুল দিয়ে ছবিকে distort যায় নিচের মত ।
১৫) টেক্সট টুলঃ এটা দিয়ে ছবিতে বিভিন্ন রকম টেক্সট লেখা যায়।
এছাড়াও আছে (১৬) পাথ সিলেকশান টুল (১৭) লাইন টুল (এতে অন্যান্য টুলও আছে।এগুলো দিয়ে ইমেজে বিভিন্ন আকারের শেপ তৈরি করা যায়।) (১৮) পেন টুল (১৯) আইড্রপার টুল (২০) জুম টুল ও (২১) হ্যান্ড টুল (২২) ফরগ্রাউন্ড কালার ও (২৩) ব্যাকগ্রাউন্ড কালার। পরবর্তী পর্বগুলোতে প্রজেক্টের মাধ্যমে এগুলোর ব্যবহার দেখানো হবে।
ফটশপের উপরের দিকে রয়েছে টুলস অপশন্স বার।
আপনি যে টুল সিলেক্ট করবেন এখানে সেই টুল সংশ্লিষ্ট সেটিং দেখানো হবে।
এর উপরে রয়েছে মেনুবার।
কোন ইমেজ বা ডকুমেন্ট খুলতে গেলে file মেনু থেকে খুলতে হয়। উল্লেখ্য,ফটোশপে যেকোনো ইমেজকে ডকুমেন্ট বলা হয়। এছাড়াও এখানে অন্যান্য অপশনের ব্যবহার পরবর্তীতে প্রজেক্টের মাধ্যমে দেখতে পাবেন।
ফটোশপ উইন্ডোর ডানদিকে যে অংশটি রয়েছে এগুলোকে বলা হয় প্যালেট।
যেমন দেখুন, নিচের দিকে রয়েছে ৩টি প্যালেট।
লেয়ার প্যালেট, Channel প্যালেট
ও পাথ প্যালেট। উল্লেখ্য,এখানে প্রতিটি ট্যাবই এক একটি প্যালেট।
ফটোশপের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এতে লেয়ারের উপরে কাজ করা যায়। লেয়ারকে আপনি স্বচ্ছ কাচের মত ভাবতে পারেন, যে কাচের ভিতর দিয়ে এর নিচে অবস্থিত কাচকেও দেখা যায়। এরকম প্রতিটা কাচেই ছবি অঙ্কন করা যায়। যখন একটি কাচের ( লেয়ারের) ছবি মুছে ফেলা হয়, তখনও অন্য কাচে (লেয়ারে) অঙ্কিত ছবিতে কোনো প্রভাব পড়ে না।
Swetches প্যালেটে বিভিন্ন কালার স্যাম্পল দেয়া আছে।
ফটোশপে কোনো কিছু অঙ্কন করা থেকে শুরু করে কোনো কিছু মোছা পর্যন্ত যত কাজ করা হবে,সবই হিস্টোরি প্যালেটে লিস্ট আকারে থাকবে।
নেভিগেশন প্যালেটে আপনার ইমেজটি ছোট আকারে দেখতে পাবেন।
বন্ধুরা,আজকের পোষ্টে ফটোশপ সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারনা দেয়ার চেষ্টা করলাম, এছাড়াও আপনারা পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে ফটোশপের ব্যাপারে আরো বিস্তারিত ধারণা পাবেন। আজ এ পর্যন্তই, সবাই ভালো থাকবেন,কেমন লাগলো জানাবেন, সবাইকে ধন্যবাদ। (3673)