স্পন্সরড এলার্ম


(শাওন রহমান) দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার পর অবশেষে বাংলাদেশ থেকে ভারতের সাতটি রাজ্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির (বিএসসিসিএল)। সোমবার ঢাকা সফররত ভারতের রাষ্ট্রীয় টেলিকম কোম্পানি বিএসএনএল-এর প্রতিনিধি দল ও বিএসসিসিএলের বৈঠকে আপাতত ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বিএসএনএলের শীর্ষ কর্মকর্তা ভিপি সিং এবং বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন এতে সই করেন।
গত শনিবার প্রতিনিধি দলটি আসে। তারা সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করবে রোববার ও সোমবার বৈঠক করে। এছাড়া টেলিযোগাযোগ সচিবের সঙ্গেও বৈঠক হয় প্রতিনিধি দলের। বৈঠকে ব্যান্ডউইথ আমদানি-রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও তার দর নির্ধারণ হয়নি। ভারতীয় প্রতিনিধি দলটি দেশে ফিরে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত করবে বলে বৈঠকে জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ, প্রতিবেশি ভারত তার পর্বত ঘেরা সাত রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানি করতে আগ্রহী। রাজ্যগুলো হচ্ছে-আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুর। এ সাত রাজ্যের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে ৪০ জিবি ব্যান্ডউইথ আমদানির প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। তবে সোমবারের বৈঠকে ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ আমদানির কথা জানায় তারা। বৈঠক শেষে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান ভিপি সিং বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ আমদানির জন্য সম্মত হয়েছি। তবে আমাদের চাহিদা অনেক। আগামি দিনে অনেক ব্যান্ডউইথ আমদানি করা হতে পারে।
মূল্যের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করবো। আমরা এমন মূল্য প্রস্তাব করবো যাতে উভয় পক্ষ লাভবান হতে পারি। কারো কোনো ক্ষতি না হয়।
বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয়ে কারিগরি দিকসহ অনেক বিষয়ে সফল আলোচনা হয়েছে। আমরা দেশে প্রতি মেগাবাইট ব্যান্ডউইথ ৪ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করি। বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
জানা গেছে, ব্যান্ডউইথ রপ্তানির জন্য দুটি রুট চূড়ান্ত করা হয়েছে।কক্সবাজারে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ল্যান্ডিং স্টেশন। সমুদ্রের নিচ দিয়েআসা অপটিক্যাল ফাইবারের লাইন এ পয়েন্ট দিয়ে উপরে উঠেছে। এ ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ডেডিকেটেড ক্যাবলের মাধ্যমে লাইন নিয়ে আসা হবে কুমিল্লা পর্যন্ত। সেখান থেকে একটি লাইন আখাউড়া হয়ে ভারত যাবে; অন্য লাইনটি যাবে কুমিল্লা থেকে তামাবিল হয়ে।
চুক্তি অনুযায়ী পূর্বদিকের সাতটি রাজ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারে এ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করবে ভারত। আর এই লক্ষ্যে আগামী ৬ মাসের মধ্যে আখাউড়া দিয়ে ভারতের আসামের সঙ্গে স্থল পথে সংযোগ স্থাপিত হতে পারে। এর আগে রোববার আলোচনার প্রথম দিন ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানির বদলে বরং তাদের পূর্ব দিকের দুটি রাজ্যের জন্যে কানেকটিভিটি (টেলিট্রানজিট) চেয়েছিল বাংলাদেশের আপত্তিতে সোমবার এই অবস্থান থেকে সরে আসে তারা। টেলিট্রানজিট পেলে পশ্চিম দিকে মূল ভূখণ্ড থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে পূর্বদিকের রাজ্যগুলোর জন্য ব্যান্ডউইথ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ভারত।
(1516)