স্পন্সরড এলার্ম


সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হতে যাচ্ছে। চারিদেকে ঘোর অন্ধকারে নীরব নিস্তদ্ধ পরিবেশ। নেই কোন বিদ্যুতের ছোঁয়া। খেজুর শাখার আড়ালে লাজুক নয়নে চাঁদ উকি দিচ্ছে। তাঁরকা গুলো জ্বলজ্বল করে রাতের স্বাক্ষী হয়ে হাসছে। যেন রাতই হচ্ছে তাদের কাম্য। কেননা, রাতেই তারা তাদের অপরূপ সৌন্দর্য্যরে বাঁধ উপেক্ষা করে দুনিয়ার মানুষের কাম দৃষ্টি লাভ করে।
দূরে কোথাও খেজুর পাতার ছাউনির মধ্য দিয়ে সামান্য আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে । ছোট্ট ছাউনির ঘরেই দুনিয়ার সকল সুখ আল্লাহ তায়ালা ঢেলে দিয়েছিলেন। হালকা নিভু নিভু আলো, খাটের উপর থেকে পা ঝুলিয়ে বসলে হয়তো নিজের পা ই দেখা যাবে না। ঘরের দেয়াল দৃষ্টি গোচর হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
ঘরে ছিল না অতিরিক্ত কোন আসবাবপত্র। তবুও পরম মমতায়, ভালবাসায় নিজের জীবনের চেয়েও প্রিয় মানুষটির জামা মুবারক সেলাই করতে ব্যাস্ত আম্মাজান হুমায়রা (আয়েশা সিদ্দীকা) রদিয়াল্লাহু আনহা।
দক্ষ হাতে নিভু আলোয় তিনি ভালবাসা দিয়ে একেকটা ফোঁর দিতে ব্যাস্ত। অন্য কোন খেয়ালই নেই তার। কেননা, এই জামা মুবারক ই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিধান করবেন।
কিন্তু বিপত্তি ঘটতে দেরি লাগলো না। তার হাত মুবারক হতে সুঁই হঠাৎই মাটিতে পড়ে গেল। ল্যাম্পের আলোতে অনেক চেষ্টা করেও ব্যার্থ হলেন। সুঁই কোথাও পেলেন না। পাবেন ই বা কি করে, এত অল্প আলোতে কী সুঁই খুঁজে পাওয়া সম্ভব?
হঠাৎ ই অন্ধকার ঘর আলোকিত হয়ে গেল। যেন আকাশের চাঁদ ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেছে। কিন্তু এতো আলো আসলো কোথা থেকে। অতিরিক্ত কোন ল্যাম্প নেই, থাকলেও কে ই নিয়ে আসবে? আর তাছাড়া ল্যাম্পের আলোতে এত বেশী আলো হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আম্মাজান যেই সুঁই তন্ন তন্ন করে খুঁজে ছিলেন কিন্তু পাননি। সেই সুঁই এখন স্পষ্টই মাটির উপরে দেখা যাচ্ছে। কি ঘটতে যাচ্ছে? রাতের বেলা ঘরের মধ্যে এত আলো হয়তো আম্মাজান কখনোই দেখেননি। আর তাছাড়া এতো আলো কিন্তু কোন তাপ নেই। ন্সিগ্ধতায়, সুঘ্রানে সমস্ত ঘর সুবাসিত হয়ে গেছে। তিনি বিচলিত হয়ে গেলেন।
কিন্তু পরক্ষণেই খেয়াল করলেন, এই আলো কোন ল্যাম্পের আলো নয়, এই আলো কোন লাইটের নয়, এই আলো কোন মশালের নয়। এই আলো স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হতেই বিচ্ছুরিত হচ্ছে। (সুবহানাল্লাহ)।
মাটি হতে আলো বিচ্ছুরিত হওয়া কোনদিনও সম্ভব নয়। তাইতো মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে পবিত্র কুরআনে নূর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার জীবনের প্রতিটি কর্মের সাথে তার আপাদমস্তক পুরোটাই ছিল নূর। তিনি হচ্ছে নূরে মুজাচ্ছাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (1905)